শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
শিরোনাম: মোহসিন আউলিয়া রহ. মাজারে ঈদে মিলাদুন্নবী দ. উপলক্ষ্যে খাবার বিতরণ       সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে কারবালার চেতনা       সাইয়্যেদুনা উসমান গণী যুন্নুরাঈনঃজীবন-কর্ম-শাহাদাৎ       সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহ'র কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়াভিজান       যুদ্ধবিরতি হলেও আরো যা যা হয় নাই-       ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক ঐক্য বিনাশে গাজায় হামলা       আরবদের উপর যায়নবাদীদের নতুন হামলা কেন?      
কোরআন শরীফে বর্ণিত সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া ' ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা...’
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১:৩০ পিএম আপডেট: ০৯.০৫.২০১৬ ৪:১৬ পিএম |

কোরআন শরীফে বর্ণিত সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া ' ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা...’

কোরআন শরীফে বর্ণিত সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া ' ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা...’

‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আজাবান্নার।’ অর্থ : হে আমার প্রভু! আমাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর, আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। -সূরা বাকারা : ২০১

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এ দোয়াকে সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দোয়াটি সবচেয়ে বেশি করতেন।

হাসানা শব্দের ব্যাখ্যা

বর্ণিত দোয়ার গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় অংশ হলো ‘হাসানা’ শব্দটি। বাংলায় এর অর্থ—সুখ, কল্যাণ, মঙ্গল ইত্যাদি। আল্লাহতায়ালা হাসানা শব্দকে দুনিয়ার জন্য ব্যবহার করেছেন আবার আখেরাতের জন্যও ব্যবহার করেছেন। দুনিয়ার হাসানাকে ব্যাখ্যা করতে যেয়ে হজরত আলী রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু  বলেছেন, নেককার স্ত্রী। ইবনে উমর রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন, নেককার সন্তান ও জনপ্রিয়তা। হজরত কাতাদা রহমতুল্লাহ আলাইহি বলেছেন, সুস্বাস্থ্য ও পর্যাপ্ত রিজিক। হজরত হাসান (রহ.) বলেছেন, দ্বীনী জ্ঞান ও ইবাদতের তওফিক। সুদ্দি (রহমতুল্লাহ আলাইহি বলেছেন, উপকারী সম্পদ। হজরত জাফর রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু  বলেছেন, বুজুর্গদের সান্নিধ্য। আল্লামা আলুসি রহমতুল্লাহ আলাইহি উপরোক্ত ব্যাখ্যাগুলো উদ্ধৃতি করার পর মন্তব্য করেছেন, ‘আসলে হাসানা একটি ব্যপক শব্দ। কল্যাণ ও সুখের নির্দিষ্ট একটি দিক বা উপকরণ এখানে উদ্দেশ্য নয়। বরং সামগ্রিক ও পূর্ণাঙ্গ সুখ ও কল্যাণ এখানে উদ্দেশ্য হবে। আমাদের পূর্বসূরি মুফাসসিররা হাসানার ব্যাখ্যা নির্দিষ্ট করার জন্য উপরোক্ত মতগুলো পেশ করেননি। বরং তারা সহজে বুঝার জন্য উদাহরণ দিয়েছেন মাত্র।’

মোট কথা, দুনিয়ার হাসানা ও আখেরাতের হাসানা বলতে বুঝায়, মানুষের দুনিয়া ও পরকালের জীবনের সব প্রয়োজন পূরণ হওয়া এবং উভয় জীবনে সুখ, শান্তি ও আরাম-আয়েশে থাকা।

দোয়ার শিক্ষা

জীবনের উদ্দেশ্য বিবেচনাতে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত। যথা— 

১. কিছু মানুষ দুনিয়াকেই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মনে করে। দুনিয়ার জীবনে সুখ-শান্তি, সম্পদ, সম্মান, প্রতিপত্তি ইত্যাদি তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। তারা যা কিছু করে সব কিছু দুনিয়ার স্বার্থে করে। এমনকি তারা যদি নামাজ পড়ে, হজ করে, জিকির করে, তাসবিহ পাঠ করে, মোনাজাত করে তবে এগুলোও দুনিয়ার জন্যই করে। যদি শোনে এ তাসবিহ পড়লে ধন বাড়বে তারা আগ্রহের সঙ্গে তা আমল করে। কিন্তু যদি শোনে এ তাসবিহ পড়লে আল্লাহ রাজি হবেন বা জাহান্নাম থেকে বাঁচা যাবে তবে এ আমল করতে তারা কোনো আগ্রহবোধ করেন না।
 
২. কিছু মানুষ দুনিয়ার সুখ চায় আবার আখেরাতের সুখও চায়। দুনিয়ার জন্যও তারা মেহনত করে আবার আখেরাতের জন্যও মেহনত করে। তবে আখেরাতের জীবন ও সুখ তাদের কাছে প্রধান বিষয়। যদি আখেরাত ঠিক রাখতে যেয়ে কখনো দুনিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে তারা দুনিয়ার ক্ষতি মেনে নিয়ে হলেও আখেরাত ঠিক রাখে। তারা দুনিয়ার সুখের জন্য আখেরাত ধ্বংস করতে রাজি না। হ্যাঁ, আখেরাত ঠিক রেখে দুনিয়ার যতটুকু সুখ, শান্তি লাভ সম্ভব ততটুকুর জন্য তারা আগ্রহী থাকে।

৩. কিছু মানুষ দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও প্রয়োজনকে অস্বীকার করে। দুনিয়ার জন্য কিছু করতে তারা রাজি না। এমনকি দুনিয়ার সুখের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করাকেও তারা মন্দ দৃষ্টিতে দেখে। আল্লাহর কাছে দুনিয়ার কোনো কিছু চাওয়াকে তারা তাকওয়া ও বুজুর্গির পরিপন্থী মনে করে।

পবিত্র কোরআনে কারিমের উপরোক্ত দোয়া ওপরে বর্ণিত প্রান্তিক দু’শ্রেণি থেকে পৃথক হয়ে দুই নম্বরে বর্ণিত মধ্যপন্থী হওয়ার শিক্ষা দেয়। এ দোয়া ওপরে বর্ণিত দু’ধরণের সঙ্কীর্ণ চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে দুই নম্বরে বর্ণিত মুক্তচিন্তা লালনের শিক্ষা দেয়।

জাগতিক সুখকে একমাত্র লক্ষ্য স্থির করা বা তাকে প্রাধান্য দেয়া হবে মানব জীবনের সবচেয়ে চরম ভুল সিদ্ধান্ত। শুধু দুনিয়া লাভের বাসনা ও আকাঙ্ক্ষার নিন্দা করে সূরা বাকারার ২০০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা এমনটি করবে আখেরাতে তারা কিছুই পাবে না।’

আবার দুনিয়াকে একেবারে অস্বীকার করা, দুনিয়ার প্রয়োজনকে অস্বীকার করা ইত্যাদি কাজ হবে নবীদের সুন্নত ছেড়ে দেয়ার নামান্তর। কেননা, নবীরা আল্লাহর কাছে সন্তান প্রার্থনা করেছেন, বিয়ে করেছেন, হালাল উপার্জনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

যারা আখেরাতের জীবনের সুখ-শান্তিকে প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়ার প্রয়োজন পূরণের জন্য হালাল উপায় অবলম্বন করবে এবং উভয় জগতের সব প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে, ‘তারা (দুনিয়া-আখেরাতে) তাদের আমলের বিনিময় পাবে।’ -সূরা বাকারা : ২০২

>> মিলাদুন্নবী صلی اللہ علیہ وسلم উপলক্ষ্যে আল্লামা হাফেয মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল (রাঃ)’র জুমুআর খুৎবা










সর্বশেষ সংবাদ
মোহসিন আউলিয়া রহ. মাজারে ঈদে মিলাদুন্নবী দ. উপলক্ষ্যে খাবার বিতরণ
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে কারবালার চেতনা
সাইয়্যেদুনা উসমান গণী যুন্নুরাঈনঃজীবন-কর্ম-শাহাদাৎ
সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহ'র কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়াভিজান
যুদ্ধবিরতি হলেও আরো যা যা হয় নাই-
ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক ঐক্য বিনাশে গাজায় হামলা
আরবদের উপর যায়নবাদীদের নতুন হামলা কেন?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
অগণিত কারামতের ধারক গাউসুল আ’যম (কলাম -১)
দুরুদ শরীফ পাঠের ফজিলত
শা’বান মাস ও শবে বরাতের তাৎপর্য
ইসলামে কাব্য, কবিতা, কাব্য চর্চা : না'তে রাসূল "মীলাদ শরিফ" কবিতার নাম
লাইলাতুল বরাতের প্রামাণ্যতা ও তাৎপর্য
ঈদে মিলাদুন্নবী ﷺ এঁর পক্ষে ওহাবী গুরু ইবনে তাইমিয়া ওইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর  ফতোয়া
"হায়াত মউত কবর হাশর" কিতাব বিতরণ
প্রকাশক ও সম্পাদক :---
"মা নীড়" ১৩২/৩ আহমদবাগ, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪
ফোন : +৮৮-০২-৭২৭৫১০৭, মোবাইল : ০১৭৩৯-৩৬০৮৬৩, ই-মেইল : [email protected]