শিরোনাম: |
মুসলিম উম্মাহর চিরশত্রু
ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের
ইসরাইলের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন
দ্য গার্ডিয়ান,
|
ছয় বছরের কূটনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক ও ইসরায়েল। রোমে দুপক্ষের আলোচনার পর রোববার রাতে এ ঘোষণা আসে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ঘোষণা দিয়ে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিনআলি ইলদিরিম বলেছেন, ১০ হাজার টন ত্রাণ সাহায্যের একটি চালান আগামী শুক্রবার গাজার উদ্দেশে পাঠানো হবে। বিনিময়ে তুরস্ক সে দেশে ইসরায়েলের প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালনের পথ সুগম করতে রাজি হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে গ্যাস চুক্তির বিষয়ে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি।তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিন আলী বিলদিরিম রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ফলে গাজা উপত্যকা থেকে অবরোধ উঠে যাবে এবং গাজা অভিমুখে ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরাইলি হামলায় নিহতদের পরিবারগুলোকে ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তুরস্ক সরকার ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। বিনিময়ে ইসরায়েলের আশদদ বন্দর হয়ে তুরস্ককে গাজায় ত্রাণ পরিবহনের সুযোগ দেয়া হবে। এছাড়া দেশটি গাজায় বিদ্যুেকন্দ্র, হাসপাতাল ও লবণাক্ততা দূরীকরণ প্রকল্প চালু করার সুযোগ পাবে। এদিকে একই সময় রোমে পৃথক ঘোষণায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজার ওপর ইসরায়েলি নৌ-অবরোধ অব্যাহত থাকবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে রাজনৈতিক তামাশা হিসেবে অভিহিত করেছেন। দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ফলে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তুরস্কের ভণ্ডামি ও নেতিবাচক পররাষ্ট্র নীতির বিষয়টি আবারো সবার সামনে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। দ্বিপক্ষীয় মতভেদ দূর করার জন্য আমেরিকার উদ্যোগে গত মে মাস থেকে তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যকার আপোষ আলোচনা শুরু হয়। এই জাহাজে অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েল। ২০১০ সালে গাজা অভিমুখে তুরস্কের ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরাইলি কমান্ডো বাহিনীর হামলার পর তেলআবিব ও আঙ্কারার মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।তুর্কি সাহায্যকর্মীরা এ সময় গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলেন।ইসরাইলি ওই হামলায় ৯ জন তুর্কি নাগরিকসহ ৭০ জন মানবাধিকার কর্মী হতাহত হয়েছিল।ফিলিস্তিনি জনপদ গাজা ১০ বছর ধরে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধে রয়েছে। আগাম ঘোষণা দিয়েই মাভি মারমারা জাহাজটি গাজা অভিমুখে যাত্রা করেছিল।মানবিক সাহায্যবাহী নৌযানে ইসরায়েলের পাশবিক হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।তুরস্কের জনগণও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। আঙ্কারার পক্ষ থেকে তখন তেলআবিবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কছেদের ঘোষণা দেয়া হয়।পাশাপাশি ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় হামলা, আগ্রাসন, প্রাণনাশসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা করা হয়। সে সময় তুরস্ক সরকার দাবি করেছিল, যতদিন পর্যন্ত গাজায় অবরোধ থাকবে ততদিন পর্যন্ত তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের এ বক্তব্যকে সে সময় ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য মুসলমানরা ব্যাপকভাবে স্বাগত জানিয়েছিল। এমনকি আরবের কোনো কোনো মহল এরদোগানকে বীর হিসেবে অভিহিত করেছিল। তুরস্কের সঙ্গে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আলোচনার প্রায় পুরোটা ছিল হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনি এলাকার বিষয়ে। এর আগে তুরস্ক গাজা থেকে ইসরায়েলি অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। ওই দাবি থেকে সরে এসে দেশটি ইসরায়েলের বন্দর হয়ে ইসরায়েলি নজরদারিতে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে সম্মত হয়েছে।
|